ফুলবাড়ীয়া প্রতিদিন

এগিয়ে থাকে, এগিয়ে রাখে

বাণিজ্য সবশেষ

প্রথম ত্রৈমাসিকে চীনের শিল্প মুনাফা বেড়েছে ৪.৩%

চীনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক নিয়ে আবারও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এবার জানা গেল, বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের শিল্প খাতের মুনাফা বৃদ্ধির হার কম। এমনকি চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে এই খাত যে পরিমাণ মুনাফা করেছিল, তৃতীয় মাসে তা কমে গেছে।

চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (এনবিএস) তথ্যানুসারে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত মুনাফা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে; যদিও বছরের প্রথম দুই মাসে মুনাফা হয়েছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থাৎ মার্চ মাসে দেশটির শিল্প খাতের মুনাফা অনেকটাই কমেছে। খবর রয়টার্স।

গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা কমেছিল ২১ দশমিক ৪ শতাংশ। তখন মূলত কোভিডের প্রভাবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের মূল ব্যবসা থেকে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার রাজস্ব আয় করে, সেসব প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।

সংবাদে বলা হয়েছে, এ বছরের মার্চ মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মুনাফা কমেছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এনবিএস অবশ্য জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের তথ্য আলাদা আলাদাভাবে দেয়নি; যদিও তারা বলেছে, গত বছরের আগস্ট থেকে প্রতি মাসেই মুনাফা বাড়ছে।

মার্চ মাসের শিল্প মুনাফা হ্রাসের সঙ্গে অন্যান্য সূচকের মিল আছে বলেই দেখা যাচ্ছে, যেমন খুচরা বিক্রয় ও শিল্পোৎপাদন কমে যাওয়া। এর অর্থ হলো, বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ভালো হলেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা তেমন একটা বাড়েনি।

বছরের শুরুতে প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগার যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে তার গতি অনেকটা কমে যাচ্ছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মুনাফা এভাবে কমে যেতে থাকলে উৎপাদনকারীদের পক্ষে সম্পদ ও দায়ের ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে যাবে। একপর্যায়ে তাঁরা হয়তো আর ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহ দেখাবেন না। এ ছাড়া উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন উৎপাদন খাতের মুনাফা বছরের প্রথম প্রান্তিকে অনেকটা বাড়লেও সব কোম্পানি একই হারে মুনাফা করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে পার্থক্য আছে।

বছরের প্রথম প্রান্তিকে অটোমোবাইল উৎপাদন খাতের মুনাফা বেড়েছে ৩২ শতাংশ।
এদিকে গত মঙ্গলবার চীনের বৃহত্তম গাড়ি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। বড় বড় কোম্পানি তাদের সর্বশেষ মডেলের বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রদর্শন করছে সেখানে। এই ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, গাড়ি কোম্পানিগুলো এখন বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে-পেছনে ফিরে তাকানোর অবকাশ তাদের নেই।

এপ্রিল মাসেই জানা গেল, চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি প্রস্তুতকারক কোম্পানি সিএটিএলের মুনাফা বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেড়েছে। কিন্তু চাহিদা কমে যাওয়া ও প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ার কারণে টানা দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের মুনাফা কমেছে।
চীনের অর্থনীতি এখন প্রবৃদ্ধির নতুন মডেল প্রণয়নের চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে ফিচ রেটিংস চীনের সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং কমিয়ে নেতিবাচক করেছে। তারা বলছে, নতুন মডেল প্রণয়ন নিয়ে যে ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার জেরে এই অবনমন।

চীন সরকার অর্থনীতি চাঙা করতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। কিন্তু বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সরকারের উচিত হবে চাহিদা বৃদ্ধিতে নজর দেওয়া, সরবরাহ বৃদ্ধিতে নয়।